আত্মকথা ও আত্মপরিচয়

সুভাষচন্দ্র বসু – নির্বাচিত অংশ

….আমি এটা বেশ বুঝিতেছি দিন দিন যে আমার জীবনের একটা definite mission আছে তারই জন্য আমার শরীর ধারণ and I am not to drift in the current of popular opinion, লোকে ভালমন্দ বলিবে জগতের এটা রীতি but my sublime self-consciousness consists in this that I am not influenced by them. যদি জগতের ব্যবহারে আমার attitude পরিবর্তন অর্থাৎ দুঃখ নৈরাশ্য প্রভৃতি আনে তাহা হইলে বুঝিব যে আমার দুর্ব্বলতা কিন্তু যে রকম আকাশের দিকে যার লক্ষ্য সম্মুখে পৰ্ব্বত আসছে, কি কূপ আসছে তার যেমন জ্ঞান থাকে না- সেই রকম যার একমাত্র লক্ষ্য missionএর দিকে, আদর্শের দিকে তার ওসব দিকেই মোটেই ভ্রুক্ষেপ নেই।

I must move about with the proud self-consciousness of one imbued with an idea.

যাক আমি এখন বুঝিতেছি যে মানুষ হইতে গেলে তিনটি জিনিষ চাই-

(1) Embodiment of the past : I must assimilate the past history, in fact all the past civilisation of the world.

(2) Product of the present : I must study myself, study the world around me both India and abroad and for this foreign travels are necessary.

(3) Prophet of the future : I must be the prophet of the future. I must discover the laws of progress, the tendency of both the civilisation and therefrom to settle the future goal and progress of mankind. The Philosophy of life will alone help me in this.

(4) This ideal must be realised through a nation- begin with India. Is not this a grand idea?

কলিকাতা, ৩১.৮.১৯১৫

হেমন্তকুমার সরকারকে

…আগে intellectual preparationটা দরকার। তারপর কাজ ও চিন্তা একভাবে চলিবে- শেষে কর্ম্মের স্রোতে গা ভাসাইয়া দেওয়া।….

জীবনের দুইটি দিক আছে- intellect and character, দেশকে শুধু নিজের উদার চরিত্র দিলে চলিবে না- একটা intellectual ideal দেওয়া চাই

১৮.৭.১৯১৫

হেমন্তকুমার সরকারকে

আত্মত্যাগের আদর্শ লইয়াই জীবন আরম্ভ করিতে চাই, আমার কল্পনায় ও প্রবণতায় অনাড়ম্বর, জীবন ও উচ্চ চিন্তা এবং দেশের কাজে উৎসর্গীকৃত জীবনের আকর্ষণ প্রবল….

১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯২১ 

শরৎচন্দ্র বসুকে

মানুষ জীবনে এমন একটি স্থান চায় যেখানে তর্ক থাকবে না- বিচার থাকবে না- বুদ্ধি বিবেচনা থাকবে না-থাকবে শুধু Blind Worship। তাই বুঝি ‘মা’র সৃষ্টি। ভগবান করুন যেন আমি চিরকাল এই ভাব নিয়ে মাতৃপূজা করে যেতে পারি।

সেপ্টেম্বর ১৭, ১৯২৭

যে কন্টকময় পথে চলিয়াছি শেষ পর্যন্ত যেন এমনই ভাবে চলিয়া যাইতে পারি- সেই আশীর্বাদ করুন। সন্ন্যাসের শূন্যতার মধ্যে যেন জীবন শুকাইয়া না যায়। এই শূন্যতার মধ্যে যে অমৃত লুক্কায়িত আছে তার সংস্পর্শে যেন জীবনটা মঙ্গলের দিকে ফুটিয়া উঠে- সেই আশীর্বাদ চাই।

সেপ্টেম্বর ৩০, ১৯২৭

আমি চাই- এই ভারত তাহার নিজ সংসারে অধিষ্ঠাত্রী দেবী হউক; তাহার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের ভার তাহারই হস্তগত হউক। আমি চাই- এদেশে একটা স্বাধীন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হউক; তাহার সৈন্য, তাহার নৌবল, তাহার বিমানপোত, তাহার সমস্তই স্বাধীন এবং স্বতন্ত্র হউক। আমি চাই- পৃথিবীর স্বাধীন দেশসমূহে স্বাধীন ভারতের দূত প্রেরণ করা হউক। আমি দেখতে চাই- প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে যাহা কিছু মহত্তর তৎসমস্তেরই গৌরবে গৌরবান্বিত হইয়া এই ভারতমাতা, সমগ্র ভারতের সমক্ষে ষড়ৈশ্বর্যশালিনীরূপে দণ্ডায়মান হউক। আমি চাই-এই ভারত দেশে দেশে পরিপূর্ণ সত্যের বাণী, সর্বাঙ্গীণ স্বাধীনতার বাণী প্রেরণ করুক।

ডিসেম্বর ১, ১৯২৯

এই মরজগতে প্রত্যেকটি বস্তুর বিনাশ আছে এবং বিনাশ হইবে কিন্তু ভাব, আদর্শ ও স্বপ্ন অবিনশ্বর। একটি ভাবের জন্য একজন ব্যক্তিমানুষ মৃত্যুবরণ করিতে পারেন কিন্তু তাহার মৃত্যুর পর সেই ভাব সহস্র জীবনে মূর্ত হইয়া উঠিবে।.. পৃথিবীতে নিপীড়নভোগ ও স্বার্থত্যাগ ব্যতীত কোন ভাব পরিপূর্ণতা প্রাপ্ত হয় নাই।….

২৬ নভেম্বর ১৯৪০

তদানীন্তন গভর্নরকে লেখা পত্র